পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পে জটিলতা।

পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পে শেষ সময়ে এসে জটিলতা দেখা দিয়েছে। নভেম্বর মাসে বৈদেশিক ঋণের অ্যাভেলিভিলিটি পিরিয়ড শেষ হচ্ছে, কিন্তু প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ করে বিল দেওয়ার সম্ভাবনা নেই।

বিভিন্ন কাজ এগিয়ে গেলেও ভাঙ্গা জংশন, টিটিপাড়া আন্ডারপাস এবং সিটিসি ভবন নির্মাণের কাজ অনেকটাই বাকি। দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে গত দেড় মাসে কাজ তেমন অগ্রগতি হয়নি। এই অবস্থায় প্রকল্পে বেঁচে যাওয়া অর্থ দিয়ে অতিরিক্ত কাজের পরিকল্পনা রয়েছে।

বাংলাদেশ ঋণের অ্যাভেলিভিলিটি পিরিয়ড বাড়ানোর জন্য চীনের কাছে আবেদন করবে। তবে অতিরিক্ত কাজের প্রস্তাবের অনুমোদন এখনও পাওয়া যায়নি এবং চায়না এক্সিম ব্যাংক বিষয়টি যাচাই করছে। ১০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত প্রজেক্ট ইমপ্লিমেন্টেশন কমিটির (পিআইসি) বৈঠকে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

সাবেক পরিকল্পনা সচিব মামুন-আল-রশীদ জানান, বৈদেশিক ঋণের অ্যাভেলিভিলিটি পিরিয়ড বাড়ানো জরুরি। অন্যথায়, চীনা ঋণের অংশ ব্যবহার করা যাবে না। তবে অতিরিক্ত কাজের ক্ষেত্রে বাস্তব প্রয়োজনীয়তা যাচাই করতে হবে।

প্রকল্পটি সরকারি তহবিল ও চীনের জি টু জি অর্থায়নে বাস্তবায়িত হচ্ছে, যার মোট ব্যয় ৩৪ হাজার ৯৮৮ কোটি টাকা অনুমোদিত হয়েছিল। তবে প্রথম সংশোধনীর মাধ্যমে ব্যয় ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয় এবং মেয়াদ ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

অগ্রগতির দিক থেকে, আগস্ট পর্যন্ত খরচ হয়েছে ৩৩ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা, যা ৮৫.৯৮% আর্থিক অগ্রগতি নির্দেশ করে। ভৌত অগ্রগতি ৯৬%। ঢাকা-মাওয়া ও মাওয়া-ভাঙ্গা অংশের অগ্রগতি যথাক্রমে ৯৭.৫৫% এবং ৯৯.৫০%।

কিন্তু কিছু কাজ এখনও বাকি রয়েছে, যেমন ভাঙ্গা জংশন স্টেশন ভবনের অগ্রগতি ৭০%, টিটিপাড়া আন্ডারপাসের ৬০% এবং সিটিসি ভবনের ৬৫%। নির্মাণে মোট ব্যয় হবে ৩ কোটি ৬৭ লাখ মার্কিন ডলার। ইতোমধ্যে ১ কোটি ৬৯ লাখ মার্কিন ডলারের বিল সার্টিফাই করা হয়েছে।

এই অবস্থায়, ঋণের অ্যাভেলিভিলিটি পিরিয়ডের মধ্যে সব কাজ সম্পন্ন করা এবং বিল পরিশোধ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ৫ সেপ্টেম্বর অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ এবং চীনা এক্সিম ব্যাংকের মধ্যে ভার্চুয়াল সভায় জানানো হয়, অতিরিক্ত কাজের বিষয়টি যাচাই করছে ব্যাংক। ৬ মাসের সময় বৃদ্ধি করা হলেও জুলাই ও আগস্টে কাজের অগ্রগতি কম ছিল, ফলে আবারও সময় বাড়ানোর অনুরোধের প্রয়োজন রয়েছে। তবে ইআরডির প্রতিনিধি জানান, চীনা এক্সিম ব্যাংক ঋণের অ্যাভেলিভিলিটি পিরিয়ড বাড়াবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

নবীনতর পূর্বতন